মাটির তৈরি খেলনাকে প্রথমিক অবস্থায় যে রুপ দেয়া হয় তা যেমন স্থায়ী রুপ নেয়,তেমনি মানব শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য সবচেয়ে মুল্যবান সময় হচ্ছে তার জীবনের প্রথম বছরগুলো। এ সময় সে যা দেখে,যা শেখে তার ওপরই ভবিষ্যৎ ব্যক্তিত্ব,বুদ্ধিমওা,দৈতিক চরিত্র ও সামাজিক আচরন ফুটে ওঠে।মানব শিশুর মস্তিষ্কে থাকে কোটি কোটি কোষ যা পরস্পর সংযুক্ত হয় (শতকরা ৮০-৯০ ভাগ) জম্মের পাঁচ বছর বয়সের মধ্যেই এই সংযোগর ওপরই শিশুর মানসিক বিকাশ নির্ভর করে। আর এ জন্য প্রয়োজন পঞ্চ ইন্দ্রিয় কে কাজে লাগিয়ে কোষগুলোকে সক্রিয় রাখা।
শিশুর প্রথমিক বিকাশে আমাদের যা করতে হবে-মাতৃদুগ্ধ দান করা (জম্মের পরই) পুষ্টিহীনতা দূর করা (আয়োডিন, প্রোটিন ও ভিটামিনসহ সুষমা খাদ্য প্রদান করা) শিশুর টিকাগুলো যথাসময়ে দিয়েদেয়া রোগ-ব্যাধিতে ডাক্তারি পরামর্শ নিতে দেরি না করা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে দেয়া শারীরিক সুস্থতা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা প্রতিদিন শিশুর সঙ্গে বিভিন্ন আনন্দদায়ক খেলতে পারি শিশুর সঙ্গে গান, ছড়া, মজার মজার শব্দ ও গল্প শোনতে পারি নতুন কিছু করতে শিশুকে উৎসাহ ও সাহস দিতে পারি দৈনন্দিন ছোটখাটো কাজে শিশুকে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে পারি নতুন নতুন পরিবেশ ও জিনিস বা বিষয়বস্তর সঙ্গে সানন্দে পরিচয় করাতে পারি অন্য শিশু ও সৎ জনদের সঙ্গে মেশার সুযোগ দিতে পারি যত বেশি এবং বারে বারে সম্ভব তার সঙ্গে কথা বলতে পারি ও তার কথা শুনতে পারি কোনও নতুন কাজে উৎসাহী হলে প্রশংসা করতে পারি শিশুকে বলতে পারি তাকে নিয়ে আমরা গর্বিত এবং সে পরিবারের গুরুত্বপূ্ন সদস্য শিশুটি আমাদের পরম আদরের – এ কথাটি বারবার বলতে পারি।
গুরুতে সুযত্ন পেলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধিবলে”- ইসিডির এ শ্লোগানকে সামনে রেখে শিশুর পরিপূর্ণ মানসিক ও শারীরিক বিকাশে পরিবারের দায়িত্বশীল হতে পারি। শিশুর মানসিক বিকাশে ইসিডি (শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ) প্রকল্পের ব্রুস ডি পেরির লেখা থেকে সংকলিত নিম্নোক্ত বিষয়টি প্রনিধানযোগ্য- আপনার শিশু ‘আগ্রহ’ থেকে শিশু ‘উদ্ভাবন’ করতে শেখে। ‘উদ্ভাবন’ থেকেই করে ‘আবিষ্কার’। ‘আবিষ্কারের’ মাঝে আছে ‘আনন্দ’। ‘আনন্দ’ থেকেই শিশু কিছু করে ‘বারবার’। ‘বারবার’ করা থেকেই সে হয় ‘পারদর্শী’। ‘পারদশীতা’ থেকে আসে ‘আত্মবিশ্বাস’। ‘আত্মবিশ্বাসের মাঝে আছে ‘মর্যাদা’। ‘মর্যাদাই’ তাকে দেয় ‘নিরাপত্তা’। ‘নিরাপত্তা’ থেকে পায় ‘প্রেরনা’। ‘প্রেরনাই শিশুকে দেয় ‘নতুন কিছু করার আগ্রহ’। সহকারি শিক্ষক দক্ষিন জিন্নাগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চরফ্যাশন ভোলা।
Leave a Reply