বগুড়ায় সাড়ে ৮ লাখ টন চাল উৎপাদনের আশা। আমাদের লাল সবুজের দেশে বোরো খেতে বাতাসের দোলের সঙ্গে যেন সবুজ ঢেউ উঠছে। দূর কিংবা কাছে সবখানেই এখন সবুজময়। বগুড়ার মাঠে মাঠে এখন নতুন ধানের সমারোহ। এ সবুজই এখন সোনালি রঙ ধারণ করবে যখন, তখন হাসি ফুটবে কৃষকের মুখে আর গোলায় উঠবে নতুন ধান , এখন শুধু আনন্দ আর আনন্দ কারন নতুন ধান নিয়ে কথা।
বুধবার (১৮ই মে-২২) সকালে বগুড়া সদরের ১০নং ইউনিয়নের রায়মাঝিড়া স্কুল মাঠ থেকে ছবিটি তোলা। বগুড়ার বোরো চাষীরা এবারো ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন। জমিতে নিড়ানি দেয়া, সার ও কীটনাশক প্রদানসহ ধানখেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করে, এখন ধান মাড়াইয়ের কাজ করছেন চাষীরা। এরই মধ্যে বোরো খেতে পাকা শীষ দেখা যাচ্ছে মাঠে মাঠে। শীষ দেখে নতুন করে স্বপ্ন বুনছেন চাষীরা। কৃষি বিভাগের মতে, এবার জেলায় আট লক্ষাধিক টন চাল উৎপাদন হবে। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বগুড়া জেলায় প্রতি বছর বোরো ধান চাষের পর ভালো ফলন পাওয়া যায়। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ১৫ জানুয়ারি থেকে বোরোর বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়। এ বছর বগুড়া অঞ্চলে শীত বেশি থাকায় বোরোর বীজতলা তৈরি হয়েছে ঘনকুয়াশার মধ্যে। বীজতলা তৈরির পর সময়মতো চাষ হয়েছে বগুড়ায়। যে কারণে চলতি বছর ভালো ফলনের আশা করছেন চাষীরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপসহকারী কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন জানান, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে শেষ পর্যন্ত মোট আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে চাল আকারে উৎপাদন হবে ৮ লাখ ৭ হাজার ৬২৩ টন। গত বছর চাষ হয়েছিল ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১০ হেক্টর। আর চাল আকারে উৎপাদন হয়েছিল ৮ লাখ ১০ হাজার ৫৯০ টন। এ বছর প্রতি হেক্টরে ফলন পাওয়া যাবে ৫-৬ টন। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো চাষ হচ্ছে। এবারো ভালো ফলন ও দামের প্রত্যাশায় মাঠে কাজ করছেন চাষীরা। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন হবে বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারো জেলায় বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। জেলার নন্দীগ্রাম, শিবগঞ্জ, শেরপুরসহ প্রায় সব উপজেলাতেই বোরো চাষ হয়। বোরো ধান কাটা শেষে জমিতে নতুন ফসল চাষে খরচ কম হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে বোরো চাষের জমি।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বোরো চাষী আবু মুসা জানান, ১০ হাজার টাকা খরচে বিঘাপ্রতি ১৮-৩০ মণ ধান পাওয়া যায়। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চারা রোপণ শেষে মে মাসে ধান কেটে ঘরে তুলতে হয়। বগুড়া সদরের রাজাপুরের চাষী রফিকুল ইসলাম, গাবতলী উপজেলার সোহেল রানা, বোরো চাষী শিহাব হোসেন জানান, গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে তারা বোরো ধান চাষ করেছেন। প্রতি বছরই ভালো ফলন পাওয়া যায়, এবারো ভালো ফলনের আশা করছেন তারা। তারা জানান, গত বছর ধানের দাম পাওয়া গিয়েছিল। এ বছরও ধানের দাম পাওয়া গেলে লাভবান হবেন তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপপরিচালক কৃষিবিদ দুলাল হোসেন জানান, ধান ও চালের মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষক ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারো বাম্পার ফলন হবে। তাছাড়া বগুড়া কৃষি এলাকা। প্রতি বছরই এ জেলায় বোরোর বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। আশা করা হচ্ছে, এ বছরও বাম্পার ফলন হবে।
মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে চাষিরা ঝড় বৃষ্টির কারনে তারা পরছে বিপাকে। তবুও থেমে নেই জীবন যুদ্ধে।
আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন: www.fb.me/bd.ichamotinews
Leave a Reply