নিউজডেস্ক | ইছামতী নিউজ.কম
আমাদের বয়স প্রতিমুহুর্তে বেড়েই চলেছে। সেই সাথে আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি কোষ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেরই কিন্তু বয়স বাড়ছে। কিন্তু বাহির থেকে এই বয়স বৃদ্ধির পরিবর্তনটি সহজেই কিন্তু চোখে পড়ে আমাদের ত্বকে ও চুলে।
একটি প্রবাদ লক্ষ্যণীয়,”সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।” এটি আমরা সবাই জানি, ঠিক তেমনভাবেই সময়কে হয়তো আমরা ধরে রাখতে পারবো না কিন্তু নিজেদের কিছু অভ্যাস পরিবর্তন এবং ত্বকের কিছু যত্নের মাধ্যমে আমরা ত্বকের এই বয়স বৃদ্ধির প্রসেসটা(Ageing Process)-কে খুব সহজেই ধীরগতির করতে পারি।
এন্টি এজিং(Anti Ageing) কেয়ার এর ক্ষেত্রে অনেকেই জানতে চান, কবে থেকে এই কেয়ারিং টা শুরু করা উচিৎ! আসলেই এর সঠিক কোনো সময় বাধানো নেই। তবে এখন থেকেই আপনি আপনার যত্ন নেয়ে শুরু করেন যাতে এখন থেকেই এই প্রসেসটাকে ধীরগতির করতে পারেন।
ত্বকের যত্নের আগে নিজেদের কিছু পরিবর্তন বা খাদ্যাভাসের পরিবর্তন এবং লাইফস্টাইল এর পরিবর্তন এবং কিছু ব্যায়াম এর কথা মনে রাখা জরুরী।
খাদ্যাভাসের ক্ষেত্রে প্রথমেই যা মনে রাখতে হবে তা হলো- কি কি জিনিস এড়িয়ে চলতে হবে?
উচ্চমাত্রায় মিষ্টি এবং উচ্চমাত্রায় লবণ যুক্ত যেসব খাবার আছে সেগুলো এড়িয়ে চলবেন। সেই সাথে ধুমপান অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। খাবার যেসব খেতে হয় তার ভিতরে এন্টি অক্সিডেন্ট ভিটামিন যেসব খাবারে আছে যেমন- ভিটামিন-এ,ভিটামিন-সি,ভিটামিন-ই যেসব খাবারে পাওয়া যায় সে খাবার গুলো বেশি করে খেতে হবে। আমরা সবাই জানি যে, রঙ্গিন শাকসবজি বা তাজা যেসব ফল আছে সেই সবজি বা ফলে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন থাকে পাওয়া যায়। বাদামেও কিছু পরিমান এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন থাকে।
আমাদের ত্বকের জন্য খুব প্রয়োজনীয় বা ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখার জন্য খুব প্রয়োজনীয় উপাদানটি কোলাজেন,যা আমরা সবাই জানি। কোলাজেন একধরণের প্রোটিন তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যে প্রোটিন প্রচুর পরিমানে খেতে হবে। মাছ,মাংস,দুধ,ডিম,ডাল এসব খাবার থেকে আমরা সহজেই প্রোটিন বা আমিষ আমরা পেতে পারি।
প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি অবশ্যই পান করতে হবে। এর পাশাপাশি আমাদের নিজেদের অভ্যাস বা নিজেদের কিছু লাইফস্টাইলের পরিবর্তন দরকার, যেমন-প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাবেন। সেইসাথে খুব হালকা কিছু ব্যায়াম করতে পারেন অথবা ৩০ থেকে ৪০ মিনিট প্রতিদিন হাটতে পারেন,মেডিটেশন করতে পারেন। এগুলো আমাদের স্ট্রেস লিমিটকে কমিয়ে দেয়। স্ট্রেস এজিং প্রসেসটাকে বাড়িয়ে দেয় তাই এসব যদি মেনে চলেন তাহলে সহজেই এজিং প্রসেসটি কমিয়ে আনা সম্ভব।
যারা খুব বেশি ঝুঁকে কাজ করেন বা ঝুঁকে ল্যাপটপে কাজ করেন তারা এটি এড়িয়ে চলবেন। খুব বেশি ঝুঁকে কাজ করলে কিন্তু আমাদের চোখের নিচে এবং গলার চামড়াগুলো ঝুলে আসে। এই অভ্যাসটিও আমাদের পরিবর্তন করতে হবে।
ত্বকের যত্ন-
ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে ৩টি টিপস খুব ভালোভাবে মেনে চলতে হবে।
১. ক্লিনজিং- আপনার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী বা আপনার ত্বকের জন্য যে সাবান বা ফেসওয়াশ উপযোগী তা দিয়ে আপনি নিয়মিত ত্বক পরিস্কার করবেন।
২. ময়েশ্চেরাইজিং- আপনি প্রতিদিন ভিটামিন-সি,ভিটামিন-ই, হাইলুরুনিক এসিড যেসব মিয়েশ্চারাইজারে আছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। যাদের বয়স ৩০ এর বেশি হয়েছে তারা রেটিনল অথবা পেপটাইড আছে এমন কোনো ময়েশ্চেরাইজার ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ভিটামিন-সি বা ভিটামিন-ই যুক্ত সিরাম ব্যবহার করতে পারেন।
৩. সান প্রটেকশন বা সানস্ক্রিন- সানস্ক্রিন আমাদের ত্বকের জন্য খুবই জরুরী। কারণ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের এজিং প্রসেসটিকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে রিংকেল, মেলাসমা,ফ্রিকেলস সহ অন্যান্য এজিং এর যে লক্ষনগুলো আছে সেগুলোকে সময়ের আগে আমাদের ত্বকে চলে আসে। সেজন্য আমাদের দেশের যে আবহাওয়া আছে ব্রডস্পেক্ট্রাম একটি সানস্ক্রিন সবসময় ব্যবহার করা উচিৎ। তা অবশ্যই এসপিএফ-৫০ বা তার উপরে হলে ভালো হয়। মুখ ছাড়াও এ সানস্ক্রিন গলা এবং হাতে যেগুলো জায়গা খোলা থাকে সেগুলো জায়গায় ব্যবহার করতে হবে।
এতোকিছুর পরেও আমরা এই এজিং প্রসেসকে থামিয়ে দিতে পারি না। তবে এখনকার দিনে এন্টি এজিং এর জন্য বেশ ভালো ভালো ট্রিটমেন্ট আছে। বটক্স,ফিলার,লেজার সহ বেশ এডভান্স ট্রিটমেন্টও চলে এসেছে। তাই চিন্তিত না হয়ে যদি আপনার এধরণের কোনো সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডার্মাটোলোজিস্ট এর পরামর্শ নিবেন।
Leave a Reply