1. Aktarbd2@ichamotinews.com : ichamotinews : ichamotinews
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakir hosan : zakir hosan
স্বপ্নকে যে লালন আর যত্ন করতে শেখে সেই কিন্ত সাফল্যের হাসি হাসে - ইছামতী নিউজ
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:০৯ অপরাহ্ন

স্বপ্নকে যে লালন আর যত্ন করতে শেখে সেই কিন্ত সাফল্যের হাসি হাসে

Reporter Name
  • Update Time : Monday, 12 July, 2021
  • ৩৫৯ Time View

প্রতিটা মানুষ তার কাজের মধ্যে সফলতা পায় সেটা যত কস্টের হোক না কেনো। যে স্বপ্ন কে লালন করতে আর যত্ন করতে শেখে সেই কিন্ত সাফল্যের হাসি হাসে। আমার ভালোলাগার ভালোবাসার কাজের মধ্যে কাটওয়াক এর কাজটা প্রথম।

আমার ব্যবসা জীবনের টার্ন পয়েন্ট বলা চলে এই কাজকে। ১৩ বছর ধরে এই কাজের সাথে আছি জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। আমি তাজরীন তামান্না ইসলাম লুবা। ১৩ বছর হলো বগুড়া থেকে আমি দেশিও পন্য নিয়ে কাজ করছি। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছি। বিয়ে হয়েছে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে। আমি আর আমার হাসবেন্ড ২জন স্টুডেন্ট ছিলাম আর আমার হাসবেন্ড এর বাবা মা ২জন অনেক আগেই মারা গিয়েছেন বলে আমাদের জীবনের শুরু টা অনেক কঠিন ছিল আর পাশেও কাউকেই পায়নি তারপরও এগিয়ে গিয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। আমার হাসবেন্ড মেয়েদের চাকরি করা পছন্দ করেনা তাই আমার কখনোই কোন চাকরির জন্য কথা বলতে হয়নি। তাই নিজের প্রতিভা কে গুটিয়ে না রেখে বাসার নিচের ফ্লোরে ২০০৯ সালে আমার বুটিক শপ চালু করি Trendy নামে আর অনলাইন ফেসবুক পেজ ওপেন করি ২০১২ সালে Trendybogra নামে। আমি পাইকারি খুচরা ২টাই সেল করি। আমি কাজ করছি এপ্লিক কাটওয়ার্ক ড্রেস, কুশন ,শাড়ি, চাদর, কুর্তি ,পাঞ্জাবি, পর্দা , বেবি ড্রেস, কুরুশ কাজের পন্য আর জামদানি নিয়ে। আমার ব্লক বাটিক এমব্রয়ডারি সুতার কাজের পণ্য রয়েছে তবে আমার মূল পণ্যটি হ’ল অ্যাপ্লিক কাটওয়ার্ক । আমি পাইকারি আর খুচরা সেল করি। কাস্টমাইজড পন্য তৈরি করে থাকি কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী। ব্যবসা শুরু করার আগে, আমি কোন পণ্যটি আমার জন্য উপযুক্ত হবে তা খুঁজে পেতে কেবল এক বছর ধরে ইন্টারনেটে বিভিন্ন গুগল সাইটগুলি ব্রাউজ করতাম I তারপরে আমি হাতের কাজের পণ্যগুলির ওয়েবসাইটগুলি ব্রাউজ করা শুরু করি। আমি লক্ষ্য করেছি যে হাতের কাজের পণ্যগুলির জন্য প্রচুর চাহিদা আর বাণিজ্যিক চাহিদা রয়েছে। এবং এই কাজগুলি আমাদের দেশের গ্রামীণ অঞ্চলের মহিলারা সহজেই করতে পারেন। এই কাজগুলি করে অনেক অসহায় মহিলারা স্বাবলম্বী হয়েছেন। আমরা তাদের হাতের শিল্পকে সবার সামনে তুলে আনতে পারছি আমাদের কাজের মাধ্যমে । ২০০৯ সালে ৫ জন কর্মী নিয়ে বুটিক শপ চালু করি । বাড়িটা বগুড়া শহরের প্রধান সড়কের পাশপ হওয়ায় এর নিচ তলায় অল্প পরিমাণ পণ্য নিয়ে শুরু করি বুটিক কাপরের দোকান । তবে শুরুতে হাতের কাজের পণ্যে ভালো সাড়া পাইনি। বর্তমানে অনেকেই হাতের তৈরি দেশীয় পণ্য কিনে থাকেন।আমার ট্রেন্ডিবগুড়ায় বর্তমানে কাজ করেন ৬০ জনেরও বেশি কর্মী। আমার মাধ্যমে কিছু মহিলা স্বাবলম্বী হতে পারছে এটাই আমার কাছে সফলতা। ঠিকমতো পণ্য পৌঁছে দেওয়া ও গুনগত মান ঠিক থাকার কারণে Trendybogra এর সুনাম দেশের পরিধি ছাড়িয়ে এখন বিদেশেও পৌঁছেছে। ফলে নানা দেশের গ্রাহকদের কাছ থেকে অনলাইনে অর্ডার এসে থাকে নিয়মিত।। আমি দেশ এবং দেশের বাইরে পণ্য সরবরাহ করে থাকি। এখন পর্যন্ত আমার পণ্য দশটির বেশি দেশে পাঠানো হয়েছে। আমরা ইএমএস / ডিএসএল এর মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করি। শুধু প্রবাসী বাঙালিই নন, আমি অনেক বিদেশী ক্রেতার সাথে কাজ করেছি যারা আমাদের দেশের পণ্যগুলির প্রতি খুব আগ্রহী । উদ্যোক্তা জীবনের তখনই সফলতা আসে যখন তার নিজের উদ্যোগ এর প্রোডাক্ট দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বাহিরে অবস্থান করে। এখন চ্যালেঞ্জিং ডিজিটাল মার্কেটে যখন প্রবাসীরা আমাদের দেশীয় প্রোডাক ব্যবহার করতে আগ্রহী প্রকাশ করে তখন নিজে উদ্যোগটি সফলতার দিকে এগিয়ে যায়। করোনাকালীন সময়ে Women and e-commerce Forum WE গ্রুপ থেকে আর আমার পেজ থেকে যে অর্ডারগুলো পেয়েছি সে কারনে আমার কর্মীদের আর বসে থাকতে হয়নি । অনেক ধন্যবাদ উই গ্রুপের প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা কে। উই গ্রুপের নিয়মের মধ্যে থেকে নিজের আর আমার পন্যের ব্র্যান্ডিং করার জন্য উই গ্রুপ থেকে ২০২০ সালে আমাকে দেশি পন্য বিদেশে পাঠানোর জন্য Exporter of the year জয়ী ঘোষণা করা হয়। আর পরবর্তীতে আমাকে বগুড়া উই জেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। উই এর কল্যানে আজ অনেক উদ্যোক্তাদের মুখে হাসি ফুটেছে আর তাদের অনুপ্রেরণায় নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে । আমি ট্রেন্ডিবগুড়াতে শত শত লোকের রুটিরুজির সংস্থান বানাতে চাই। দেশী পণ্যের দিকে ক্রেতাদের নজর ফেরানো ও বিদেশি ক্রেতাদের আরও আকৃষ্ট করার জন্যও নানান ভাবনা আছে। প্রতিকূলতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে ভালোবাসি। এ ব্যাপারে বলতে চাই, লাভ লোকসান সব ক্ষেত্রেই থাকবে, তাই বলে থেমে থাকতে নেই। কম মূলধন নিয়ে ছোট এক শহর থেকে আমার বুটিক শপ যাত্রা শুরু করে। শুরুতে পণ্য বিক্রি না হওয়াটা ছিলো আমার সবচেয়ে বড় প্রতিকূলতা। কিন্তু আমি নিজের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলাম বলেই আজ সফল হতে পেরেছি। নতুনদের বলবো যে সেক্টরে কাজ করতে চান, প্রথমে পণ্য সম্পর্কে জানুন, শিখুন পড়াশোনা করুন। কে কি উপকরণ ব্যবহার করছে? কাজের ধরণ কী? পণ্যের গুণমান কী? ইত্যাদি বিষয় গুলো যদি দক্ষতার সাথে করা যায় তবে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া যায়। মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করেন তবে অবশ্যই দেশের বাইরে পণ্য সরবরাহ করতে পারবেন।নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য আমার পরামর্শ হলো নিজের সৃষ্টিশীলতাকে জাগিয়ে তুলুন। যে কাজটি ভালোবাসেন তা নিয়েই কাজে লেগে পড়ুন। সফলতা আসবেই। যত টাইপ এর কাজ করুন না কেনো নিজের পছন্দের ভালোলাগার ভালোবাসার একটা কাজ অবশ্যই রাখবেন তাহলে কাজের পরিতৃপ্তি আসবে আত্নবিশ্বাস জন্মাবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে গুটিয়ে না রেখে এগিয়ে যাওয়ার নাম হচ্ছে উদ্দোক্তা। “থেমে গেলেন তো হেরে গেলেন ” আর একজন এসে সেই জায়গা দখল করে নেবে এটাই হচ্ছে প্রকৃতির নিয়ম। দোয়া করবেন সবাই আমার জন্য। যত দিন বেচে থাকবো কাজ করে যেতে চাই। তাজরীন তামান্না ইসলাম লুবা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *