1. Aktarbd2@ichamotinews.com : ichamotinews : ichamotinews
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakir hosan : zakir hosan
সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারে আগে ছিল পাকিস্তান এখন ভারত - ইছামতী নিউজ
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট নিউজ :
আধুনিক বাংলাদেশের রুপকার জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার কৃষি বান্ধব সরকার-এমপি গালিব নরসিংদী রায়পুরাতে দিনব্যাপী প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত বগুড়ায় বৈশাখী মেলায় ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই বগুড়ায় এক শিশুকে গলাকেটে হত্যা নওগাঁয় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্কেলপুরের স্বামী স্ত্রী নিহত আটঘরিয়ায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত শিবগঞ্জে পরিবারের উপর অভিমান করে সিয়ামের আত্মহত্যা বাইশ কেজি গাঁজা সহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ১২ বগুড়ার মহাস্থানে জিম্মি করে কলা বোঝাই ট্রাক ছিনতাই-মালিক নিখোঁজ বগুড়া মোকামতলায় অগ্নি কান্ডে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি

সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারে আগে ছিল পাকিস্তান এখন ভারত

Reporter Name
  • Update Time : Sunday, 21 February, 2021
  • ৪৫৬ Time View

: আমাদের  মাতৃভাষার ইতিহাস এক রক্তাক্ত ইতিহাস। ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে বিশ্বে প্রথম নজির স্থাপন করে বীর বাঙ্গালীরাই। প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর মানুষের পরিচয়ের সেরা কষ্টিপাথর মাতৃভাষা। মাতৃভাষাকে অবলম্বন করেই গড়ে উঠেছে বিশ্বের প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। মাতৃভাষা জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষের এক মৌলিক সম্পদ। বাঙ্গালির মাতৃভাষা বাংলা। বহুত্যাগ কুরবানীর মাধ্যমে আমরা পেয়েছি বাংলাকে মাতৃভাষা এবং রাষ্ট্রভাষা হিসাবে। কিন্তু বর্তমানে সেই ভাষার কি অবস্থা? তাহা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী আমাদের মাতৃভাষার ওপর আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কারা ভাষা নামক সংস্কৃতির ওপর এখনও প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত? তা না হয় একটু পরেই বলছি। আসুন তার আগে অতীত সম্পর্কে একটু জেনে নিই।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রæয়ারিতে (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) পূর্ব বাংলার জনগণ রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছিল মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা। তদানীন্তন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা। কিন্তু পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব বাংলার জনগণের ওপর সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তার করার পথ বেছে নেয়। তারা ঘোষণা করে বাংলা রাষ্ট্রভাষা হবেনা, রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পাবে উর্দু। যা কিনা ছিল মাত্র ৬/৭ শতাংশ মানুষের মুখের ভাষা। এই অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হয় সমগ্র পূর্ব বাংলার ছাত্রজনতা। বাঙ্গালীরা ঘোষণা করেছিল সকল মাতৃভাষারই সমান মর্যাদা লাভের অধিকারী। তাই উর্দুর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাকেও দিতে হবে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। তাই ছাত্রজনতা ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রæয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাবিতে মিছিল বের করে। কিন্ত পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী ন্যায্য দাবি নস্যাৎ করার জন্য আন্দোলনরত ছাত্রজনতার উপর গুলি চালায়। এতে শহীদ হন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ আরোও অনেকে। এছাড়াও ১৭ জন ছাত্র যুবক আহত হয়। শহীদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। আন্দোলন আরোও প্রচন্ড বেগবান হয়। গর্জে ওঠে সারা বাংলা। আতঙ্কিত সরকার বাধ্য হয়ে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃত দেয়। এরপর থেকে শহীদদের স্মরণে ২১শে ফেব্রæয়ারি প্রতি বছর শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রæয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় বিশ্বব্যাপী একযোগে পালিত হয়। ২১শে ফেব্রæয়ারির চেতনায় ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভ, ১৯৬৯ এর গনঅভ্যুথান এবং সর্বশেষ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে।
কিন্তু আজ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ৫২ তে ভাষা নিয়ে শুধুমাত্র পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করলেও বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে হিন্দি ভাষার ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে। ইন্ডিয়ান সিরিয়াল দেখার ফলে এদেশের ছেলেমেয়েরা শুদ্ধভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারলেও হিন্দি ভাষা খুব ভালোভাবে আত্বস্ত করতে সক্ষম হয়েছে। আর ঐসব সিরিয়াল দেখে কিভাবে ষড়যন্ত্র করতে হয়, ঝগড়া শিখতে হয় তা অনায়াসে ভালোভাবে শেখা যায়। এমনকি শিশু-কিশোররা কার্টুন সিরিয়াল দেখে হিন্দি ভাষায় পাকা। আমার এক স্টুডেন্ট এর ছোট ভাই ক্লাস থ্রি তে পড়ে, অথচ তাকে যেকোন বাংলা বাক্য দিলে সে হিন্দিতে অনুবাদ করে দিতে পারে। এরকম অধিকাংশ শিশুরায় এখন এ বিষয়ে অভিজ্ঞ। কিছুদিন আগে বগুড়া সাতমাথার পাশে একটা সেলুনে চুল কাটায়ে নিচ্ছিলাম। ঐ সময়ে তার মোবাইলে রিংটন বেজে উঠল কল রিসিভ করে সেই ব্যক্তি যতগুলো কথা বলল, তার মধ্যে একটাও বাংলা ছিল না, সব পিওর হিন্দি। একই সেলুনে ৩/৪ জন একসাথে কাজ করায় যখন তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলে তার মধ্যে হাতে গোনা ২/১ টা বাংলা ছাড়া সবগুলোই হিন্দিতে বলে। অধিকাংশ সেলুনে তারা ইন্ডিয়ান সিরিয়াল দেখে এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে। আজকাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রথম দেখাতেও অনেকেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্ভাষণ সালাম না জানিয়ে অথবা বাংলায় কোন সম্ভাষণ না বলে তারা বলে ‘কিয়া বাত হায়’। আজকাল ছেলেমেয়েরা ফেসবুকে চ্যাটিং করে ইংলিশ লেটারে হিন্দি ভাষায়। সুপ্রীম কোর্টের রায় লেখা হয় ইংলিশে, যা উচ্চশিক্ষিত লোক ছাড়া বোঝা সম্ভব নয়।
সংসদ ভবনে বিরোধী দলের বক্তব্য শুনে স্পিকারও বলে আপনার বক্তব্য এক্সপান্স করা হলো। অথচ বাতিল করা হলো এটা বললেও সহজে সবাই বুঝতে পারতো। যে বাংলা ভাষার জন্য জীবন দিল সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক সহ অনেকেই। বাংলা আন্তর্জাতিক ভাষার মর্যাদা পাওয়ায় সারা বিশ্বব্যাপী একযোগে ২১শে ফেব্রæয়ারি পালিত হয়। আমরাও পালন করে থাকি। আন্তর্জাতিকভাবে তারিখ মিল রাখার জন্য না হয় করলাম। কিন্তু বাঙ্গালী হিসেবে আমরা কয়জন ১৩৫৮ সালের ৮ ফাল্গুন অনুযায়ী মাতৃভাষা দিবস পালন করি? যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে ভাষা সংগ্রামীরা আন্দোলন করেছিল। স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতাব্দী পরেও আমাদের খুঁজে ফিরতে হয় সে সব উদ্দেশ্য সফল হয়েছে কিনা? সকলেই জানেন, মাতৃভাষা বাংলাকে সর্বস্তরে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টির জন্যই ভাষা আন্দোলনের সূচনা। স্বাধীন দেশে সকলের আশা ছিল সর্বস্তরের বাংলা ভাষার ব্যবহার হবে। বিশেষ করে সরকারি দপ্তর, অফিস-আদালতে বাংলায় সেবা পাবে। কিন্তু এখনো সেটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এসব সুনিশ্চিত করতে হলে উচ্চ মহল থেকে করতে হয়। অর্থাৎ সরকার এবং বাংলা একাডেমী সহ যেসব কর্তৃপক্ষ দায়িত্বে আছেন তাদেরকে উদ্যোগ নিতে হবে। তাই ভাষার মাসে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট ভাষা আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

-মোঃ জাকিরুল ইসলাম
শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক
মোবাঃ ০১৭৮৬-৯৩২৮৬৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *